আসসালামু আলাইকুম হাই আমি মোঃ মুনজুরুল, এই ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।

আগামি কাল আপনি মারা যাবেন, এটা জানলে আপনি কি করবেন,এক ভাইবা বোর্ডের প্রশ্ন ছিল ২০২৫

 

আগামি কাল আপনি মারা যাবেন, এটা জানলে আপনি কি করবেন,এক ভাইবা বোর্ডের প্রশ্ন ছিল ২০২৫

ভূমিকা

আগামীকাল মৃত্যু হলে আপনি কী করবেন? – শত্রু ও সতর্কতার গল্প

ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত সকল সদস্য চুপচাপ। প্রশ্নটা ছিল একটু ব্যতিক্রমী, কিন্তু গভীর—

আগামীকাল আপনি মারা যাবেন, এটা যদি আজ জানতে পারেন—তাহলে আপনি কী করবেন?

প্রার্থীর উত্তরটা আরও অবাক করে দেওয়ার মতো:

আমি বেছে বেছে আমার শত্রুদের সঙ্গে দেখা করব।

বোর্ডের এক সদস্য অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি এমন সিদ্ধান্ত নেবেন কেন? নিজের প্রিয়জনদের সঙ্গে শেষ সময় কাটানো কি আরও যুক্তিযুক্ত হতো না?”

প্রার্থী শান্তভাবে উত্তর দিলেন:

যাদের আমি ভালোবাসি, তাদের সঙ্গে শেষ দেখা করলেই মায়া বাড়বে। বিদায়ের কষ্ট আরও তীব্র হবে। বরং যাদের মনে আমার প্রতি রাগ আছে, যদি তাদের সঙ্গে একটু ভালো ব্যবহার করি, তাহলে হয়তো তারা আমাকে নিয়ে আরেকটু ভালোভাবে ভাববে। সম্ভবত তারা আমার জন্য দোয়া করবে।

গভীর বার্তা

এই ছোট্ট কথোপকথনের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক অসাধারণ মানবিকতা ও আত্মোপলব্ধির দৃষ্টান্ত।

আমরা যখন কোনো কাজ করি, সেটা যদি শুধু নিজের জন্য করি, তাহলে তার পরিধি ছোট থাকে। কিন্তু যদি অন্যদের—বিশেষ করে আমাদের সমালোচকদের জন্যও কিছু করি, তখন সেটি আমাদের চরিত্রকে সমৃদ্ধ করে।

বিশ্বাস করুন, যে মানুষটি আপনার বানান ভুল ধরে, সে আপনার প্রশংসাকারীর চেয়ে অনেক বেশি দরকারি। কারণ তার ভয়ে আপনি সাবধান হবেন, আপনার লেখার মান উন্নত হবে।

শত্রু মানেই ক্ষতি নয়।

শত্রু মানে সতর্কতা।

শত্রুদের উপস্থিতি অনেক সময় আমাদের বেশি সচেতন করে তোলে। তারা আমাদের দুর্বল দিকগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। তাই তাদের ঘৃণা নয়, বরং কৌশলী শ্রদ্ধা দেখানোই উচিত।

ঘৃণার জবাবে শুভকামনা

জীবনে এমন পরিস্থিতি আসতেই পারে, যখন কেউ আপনাকে কটূ কথা বলবে, গালি দেবে, অপমান করবে। আপনি যদি পাল্টা গালি দেন, তাহলে আপনি তার মতই হয়ে গেলেন। সে জিতে গেল।

কিন্তু আপনি যদি ঠান্ডা মাথায় তাকে বলেন—"আপনার জন্য শুভকামনা রইল", তখন সেই ব্যক্তি আপনি সম্পর্কে নতুন করে ভাববে। হয়তো আপনি তার জীবনের কোনো পজিটিভ পরিবর্তনের কারণ হয়ে যাবেন।

তর্কে হার মানলেই কি আপনি হেরে গেলেন?

না, সব সময় না।

যখন কেউ যুক্তিপূর্ণ কথা বলে এবং আপনি সেই যুক্তি মেনে নেন, তখন আপনি আসলে জ্ঞান ও পরিপক্কতার পরিচয় দেন। তর্কে জয় নয়, মনের উন্মুক্ততাই প্রকৃত বিজয়।

সবার ভালোবাসা পাওয়া যায় না, কিন্তু সবার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকা যায়। প্রতিটি সমালোচনা, প্রতিটি ভুল ধরানো মন্তব্য আমাদের উন্নতির দিকে ঠেলে দেয়। আপনি যদি এই বাস্তবতা বুঝতে পারেন, তাহলে প্রতিটি শত্রুও এক একজন মূল্যবান শিক্ষক হয়ে দাঁড়াবে।

আত্মসম্মান ও বিনয়

সমাজে অনেক সময় দেখা যায় কেউ ক্ষমতা দেখায়—বলে, “আমি অমুকের ভাতিজা।” আপনি যদি পাল্টা বলেন, “আমি তমুকের ভাগ্নে,” তাহলে আপনি তারই পথে হাঁটলেন।

বরং আপনি শান্তভাবে বলুন—"ভালো থাকুন ভাই, আপনি আমার সিনিয়র।"

এই বিনয়ে আপনি ছোট হবেন না—বরং অনেক বড় হবেন।

সমাপ্তি

এই গল্পটি কেবল একটি ভাইভা প্রশ্নের উত্তর নয়। এটা এক গভীর দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যা আমাদের শেখায়:

ঘৃণাকে ঘৃণায় জয় করা যায় না।

শত্রুকে ঘৃণা না করে তাকে সামলে চলা উচিত।

সমালোচনা গ্রহণ করাটাই উন্নতির প্রথম ধাপ।

নিজের মৃত্যু যদি নিশ্চিত হয়, তবুও মানুষের মধ্যে দয়া ছড়িয়ে যেতে পারে।

তাই আসুন, ভালো থাকুক আমাদের চারপাশের মানুষগুলো।

ভালোবাসার, ঘৃণার, কাছের, দূরের—সবার জন্য শুভকামনা।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url